Monday, June 2, 2025
Homeবিবিধমাছ আসবে আকাশপথে! ড্রোন প্রযুক্তিতে গ্রাম ও পাহাড়ের চিত্র বদলাবে ভারত সরকার

মাছ আসবে আকাশপথে! ড্রোন প্রযুক্তিতে গ্রাম ও পাহাড়ের চিত্র বদলাবে ভারত সরকার

-

- Advertisement -
- Advertisement -

ভারতের মৎস্য, পশুপালন ও দুগ্ধ মন্ত্রক এক চমকপ্রদ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশের মৎস্যজীবীদের জন্য। ড্রোন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এবার মাছ পরিবহন করা হবে দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায়ও! এই নতুন পাইলট প্রকল্প-এর মাধ্যমে তৈরি করা হবে এমন এক ড্রোন, যা একসাথে ৭০ কেজি পর্যন্ত মাছ বহন করতে পারবে। উদ্দেশ্য – জীবন্ত মাছ দ্রুত, নিরাপদ এবং কার্যকরভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে দেওয়া।

সমস্যার সমাধানে প্রযুক্তির ছোঁয়া

দেশের অনেক দূরবর্তী গ্রামে বা পাহাড়ি অঞ্চলে আজও ভালো রাস্তা নেই। ফলে সেসব জায়গায় তাজা মাছ পৌঁছনো একটি বড় সমস্যা। সরকারের এই নতুন উদ্যোগ সেই সমস্যারই সমাধান করতে চলেছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. অভিলক্ষ লিখি জানিয়েছেন, “এই প্রকল্প মৎস্যজীবীদের আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে এবং তাদের ব্যবসা আরও লাভজনক করে তুলবে।” কারণ, ড্রোনের মাধ্যমে মাছ কম সময়ে বাজারে পৌঁছাবে, ফলে দামও বেশি পাওয়া যাবে।

মজবুত উন্নয়নের পথে

এই প্রকল্পের লক্ষ্য শুধুমাত্র মাছ পরিবহন নয়, বরং গোটা মৎস্যখাতকে আধুনিক এবং মজবুত করে তোলা। ড. লিখি বলেছেন, “স্মার্ট ও মজবুত মৎস্য বন্দর এবং আধুনিক মাছের বাজার তৈরির লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগোচ্ছি।” ড্রোন প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা হবে স্যাটেলাইট ম্যাপিং, বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ এবং ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি, যা মৎস্যজীবীদের কাজের গতি ও নিরাপত্তা দুই-ই বাড়াবে।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

বর্তমানে ৭০ কেজি বহনক্ষম ড্রোন নিয়ে কাজ হলেও, ভবিষ্যতে আরও ভারী ড্রোন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ICAR-Central Inland Fisheries Research Institute (CIFRI), Kolkata ইতিমধ্যেই ১০০ কেজি বহনক্ষম ড্রোন তৈরির কাজ শুরু করেছে। ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, কলকাতায় এই ড্রোনের একটি সফল ডেমো করা হয়েছে, যেখানে ড. লিখি স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন এবং মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সরাসরি কথাও বলেন।

সরকার ড্রোন প্রযুক্তিকে আরও বিস্তৃতভাবে ব্যবহার করতে চাইছে। পরিকল্পনায় রয়েছে স্প্রেয়ার ড্রোন, ফিড ব্রডকাস্ট ড্রোন, এবং কার্গো ডেলিভারি ড্রোন। পাশাপাশি ‘অমৃত সরোবর’ প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস্য চাষকে উৎসাহিত করা, সামুদ্রিক শৈবাল চাষ, এবং কৃত্রিম প্রবাল প্রাচীর তৈরির মতো আধুনিক উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।

রাজ্যের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ

ড. লিখি রাজ্য সরকারগুলিকে এই প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “SOP (Standard Operating Procedure) এবং ভর্তুকির কাঠামো গঠনের জন্য একসাথে কাজ করা দরকার।” পাশাপাশি স্টার্টআপ এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় মাছ প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নতিও করা হবে।

এই ড্রোন প্রযুক্তির প্রকল্প শুধু একটি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়, বরং ভারতের মৎস্য খাতে এক বিপ্লবী পদক্ষেপ। দুর্গম এলাকায় মাছ পরিবহনের বাধা দূর হবে, আর মৎস্যজীবীরা পাবে বেশি লাভ ও সম্মান। সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের স্মার্ট এবং মজবুত উন্নয়নের পথচলায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে চলেছে।

- Advertisement -

Related articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Latest posts