Tuesday, June 10, 2025
Homeবিবিধ“Digital Arrest”! অনলাইনে এই নতুন প্রতারণার জালে জড়িয়ে কীভাবে সর্বস্ব হারাচ্ছে  ভারতীয়রা?

“Digital Arrest”! অনলাইনে এই নতুন প্রতারণার জালে জড়িয়ে কীভাবে সর্বস্ব হারাচ্ছে  ভারতীয়রা?

-

- Advertisement -
- Advertisement -

ইন্টারনেট এবং সাইবারস্পেস প্রতারণার হাতছানিতে ভরা। অনলাইন ডেটিং স্ক্যাম, Cryptocurrency প্রতারণা থেকে শুরু করে পিগ বুচারিং স্ক্যাম, প্রতারণার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে একটি নতুন ধরনের প্রতারণা ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে: ডিজিটাল গ্রেপ্তার প্রতারণা বা Digital Arrest Scam

Digital Arrest Scam কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে?

এই প্রতারণা মূলত কুরিয়ার প্রতারণা থেকে উদ্ভূত। 2023 সালে এটি জনপ্রিয় হয়, যেখানে প্রতারকরা FedEx-এর কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে জানান যে একটি প্যাকেজে অবৈধ বস্তু পাওয়া গেছে। এরপর ভুক্তভোগীকে কাস্টমস বা সাইবার সেল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করানো হয়। তাকে বলা হয়, রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (RBI) অনুমোদিত একাউন্টে অর্থ জমা দিলে তাঁকে গ্রেপ্তার এড়াতে সাহায্য করা হবে।

এই প্রতারণার ধরণ প্রায় একই: প্রতারকরা RBI, টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) বা বিচারকদের পরিচয় দিয়ে ফোন বা ভিডিও কলে হুমকি দেন। তাঁরা জাল আইডি, সরকারি লোগোসহ চিঠি বা নকল কোর্ট সেশন ব্যবহার করে বিশ্বাসযোগ্যতার ছাপ দেন। ডক্টর রাখশিত তান্ডন, সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ, জানান, এই প্রতারকরা মানুষের অপরাধবোধ কাজে লাগায় এবং তাঁদের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে।”

কীভাবে মানুষ প্রতারিত হয়?

প্রতারকরা ভুক্তভোগীদের ব্যক্তিগত তথ্য আগেই জোগাড় করে, যেমন অনলাইন শপিংয়ের তথ্য। এগুলো ব্যবহার করে তাঁরা নিজেদের সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা হিসেবে প্রমাণ করে। এমনকি, তাঁরা Skype-এর মাধ্যমে ভিডিও কল করেন এবং পুলিশের পোশাকে উপস্থিত হন।

সম্প্রতি, তাঁরা AI App ব্যবহার করে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যদের কণ্ঠ নকল করে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করছেন।

কারা এই প্রতারণার পেছনে?

প্রাথমিকভাবে এই প্রতারণার শেকড় কাম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, এবং লাওস-এর মতো দেশগুলোতে। এখানকার ক্যাসিনো থেকে পরিচালিত স্ক্যাম কম্পাউন্ড-এ ভারতীয় তরুণদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কেউ কেউ স্বেচ্ছায় প্রশিক্ষণ নেয়, আবার কেউ জোরপূর্বক আটক থাকে।

ভারতীয় সাইবার ক্রাইম সমন্বয় কেন্দ্র (I4C) জানিয়েছে, এই প্রতারণা থেকে অর্জিত অর্থ মিউল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি-এর মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার করা হয়।

ভারতের পদক্ষেপ এবং প্রতিরোধের উপায়

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি মন কি বাত-এ জনগণকে সতর্ক করেছেন: Digital Arrest নামে কোনো আইন নেই। কোনো সরকারি সংস্থা ফোন বা ভিডিও কলে আপনাকে হুমকি দেবে না।”

Skype ইতিমধ্যে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যেমন সন্দেহজনক Keyword-এর উপর ভিত্তি করে রিয়েল-টাইম অ্যালার্ট। এছাড়া, I4C এর মাধ্যমে 1700-এর বেশি Skype ID সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের দ্রুত প্রতিক্রিয়া (প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘Chakshu’ পোর্টাল এবং জাতীয় সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন (1930)-এ অভিযোগ জানিয়ে টাকা আটকে রাখা সম্ভব।

2024 সালে, মোট প্রতারণার মধ্যে 11,269 কোটি টাকার মধ্যে 1,361 কোটি টাকা আটকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে, যদিও মাত্র 11.97 কোটি টাকা ভুক্তভোগীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।

সতর্ক থাকুন, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ করুন

ডিজিটাল যুগে প্রতারণার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা আমাদের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। আপনার এবং আপনার প্রিয়জনদের সুরক্ষার জন্য প্রতিটি অজানা কলের প্রতি সন্দেহপ্রবণ হন এবং প্রয়োজনে সরকারি হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন।

- Advertisement -

Related articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Latest posts