Saturday, June 14, 2025
Homeপ্রতিরক্ষারাশিয়ার Su-57কে কেন বেছে নিল ভারত? কৌশলগত কারণে বাদ পড়ল আমেরিকার F-35

রাশিয়ার Su-57কে কেন বেছে নিল ভারত? কৌশলগত কারণে বাদ পড়ল আমেরিকার F-35

-

- Advertisement -
- Advertisement -

ভারতের প্রতিরক্ষা সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র অস্ত্র কেনাবেচার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি ভারতের কৌশলগত স্বাধীনতা ও প্রযুক্তিগত আত্মনির্ভরতার প্রতিফলন। এই প্রসঙ্গেই আলোচনায় উঠে এসেছে Russia-র Su-57 বনাম America-র F-35 যুদ্ধবিমান। তবে এই তুলনা শুধুই প্রযুক্তির নয়, এর পেছনে রয়েছে বড় সিদ্ধান্ত।

ভারতের আকাশসেনার চাহিদা

বর্তমানে Indian Air Force-এর কাছে রয়েছে মাত্র ৩১টি ফাইটার স্কোয়াড্রন, যেখানে প্রয়োজন অন্তত ৪২টি। পুরনো MiG-21, Jaguar, ও Mirage 2000 গুলির সময় সীমা শেষের দিকে। এর মাঝে পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে তারা চিনের-র কাছ থেকে ৪০টি J-35 5th জেনারেশন স্টিলথ জেট নিচ্ছে, যার ডেলিভারি শুরু হবে August 2025-এ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের হাতে সময় কম।

ভারতের নিজস্ব AMCA (Advanced Medium Combat Aircraft) প্রকল্প বাজারে আসবে ২০৩৫-এর পরে, ফলে মাঝখানের এক দশকের জন্য দরকার বিদেশি সমাধান।

প্রযুক্তি হস্তান্তর

Russia Su-57-এর সম্পূর্ণ source code ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে ভারত নিজস্ব AESA radar, mission computerAstra missile যুক্ত করতে পারবে। ফলে এটা হবে প্রকৃত অর্থে আত্মনির্ভর প্রকল্প।

USA-র F-35 প্রোগ্রাম একেবারে উল্টো। ITAR আইন অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুব কঠোর, এমনকি Israel, Japan, Australia-র মত বন্ধু দেশগুলোকেও অনেক প্রযুক্তি দেয়নি। এর ফলে ভারতের Make in India বা Atmanirbhar Bharat লক্ষ্য পূরণ হবে না।

ভারতের পূর্বের Su-30MKI অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উৎপাদন কতটা সফল। রাশিয়া একইভাবে Su-57 উৎপাদনে HAL-এর মাধ্যমে সহায়তা করতে প্রস্তুত।

খরচ ও রক্ষণাবেক্ষণ

একটি Su-57 এর দাম আনুমানিক $35-40 million, যেখানে F-35A-এর দাম $80-110 million! বেশি খরচ মানেই কম সংখ্যক ফাইটার, যা ভারতের বড় ফ্লিট চাহিদার পরিপন্থী।

এছাড়া F-35-এর রক্ষণাবেক্ষণে বিশাল খরচ; Pentagon বলছে এর মোট খরচ $1.58 trillion পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে! তাছাড়া প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও বজ্রপাত সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে F-35 এ।

ভূ-রাজনৈতিক দিক ও আত্মনির্ভরতা

CAATSA-র কারণে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি রয়েছে, বিশেষ করে রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বজায় রাখায়। আমেরিকা অনেক সময় অস্ত্র বিক্রিকে কূটনৈতিক চাপের হাতিয়ার করে, যেমন Apache helicopter বা engine transfer ইস্যুতে দেখা গেছে।

রাশিয়া বিপরীত চরিত্র—১৯৭১-র যুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ অবধি ভারতকে কখনও নিরাশ করেনি। ভারতের কৌশলগত স্বাধীনতা বজায় রাখতে এমনই নির্ভরযোগ্য সঙ্গীর প্রয়োজন।

প্রযুক্তিগত কার্যকারিতা ও বাস্তবতা

F-35 মূলত stealthnetwork-centric warfare-এ ফোকাস করে, যা জোট অভিযানে কার্যকর। কিন্তু ভারতের নিজস্ব অপারেশনাল চাহিদা আলাদা।

Su-57-এর maneuverability, super-cruise, ও multi-role combat ক্ষমতা চিনা সীমান্তে অভিযানে ভারতের প্রয়োজনের সঙ্গে ভালোভাবে খাপ খায়।

তাছাড়া ভারতের বর্তমান অস্ত্রভাণ্ডারে Russian-origin systems (যেমন BrahMos, Su-30MKI, S-400, T-72) রয়েছে। এর সঙ্গে Su-57 সহজেই মানিয়ে যাবে, কিন্তু F-35 এর জন্য নতুন ট্রেনিং, মেইন্টেনেন্স ও অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।

ভারতের সামনে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—স্বল্পমেয়াদি সুবিধা নাকি দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত স্বাধীনতা? Su-57 হয়তো সর্বদিক থেকে নিখুঁত নয়, তবে এর প্রযুক্তি হস্তান্তর, খরচ, ও আত্মনির্ভরতা অর্জনের পথ ভারতের জন্য দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক।

- Advertisement -

Related articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Latest posts