Monday, June 2, 2025
HomeAIভারতের কর্পোরেট কালচারে AI-এর হাওয়া: পাল্টে যাচ্ছে অফিসের চালচিত্র

ভারতের কর্পোরেট কালচারে AI-এর হাওয়া: পাল্টে যাচ্ছে অফিসের চালচিত্র

-

- Advertisement -
- Advertisement -

কল্পনা করুন এক অফিস, যেখানে মিড লেভেল ম্যানেজার নেই—তাদের জায়গায় AI কাজের সূচি বানাচ্ছে, কর্মীদের রিপোর্ট ট্র্যাক করছে, এমনকি সিদ্ধান্তও নিচ্ছে! শুনতে অবাক লাগলেও, এটা এখন কল্পনার জগতে আটকে নেই—ভারতের অনেক অফিসেই এখন বাস্তব হয়ে উঠছে এই চিত্র।

মুছে যাচ্ছে পিরামিড মডেল

এক সময়ে ভারতের অফিস সংস্কৃতি ছিল পিরামিডআকৃতির—মানে উপরে বড় বস, মাঝখানে অসংখ্য ম্যানেজার, নিচে হাজার হাজার কর্মী। কিন্তু AI-আসার ফলে বদলে যাচ্ছে এই কাঠামো। এখন শীর্ষ নেতৃত্ব শুধু কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত, মাঝখানের অনেক কাজ করে ফেলছে AI সিস্টেম। কর্মীরা নিচে থেকেও AI-এর স্পাইকড টুলস ব্যবহার করে আরও দ্রুত, নিখুঁতভাবে কাজ করতে পারছেন।

বেঙ্গালুরুহায়দ্রাবাদে নজিরবিহীন উদাহরণ

বেঙ্গালুরু কিংবা হায়দ্রাবাদের ই-কমার্স সংস্থাগুলো আজ AI দিয়ে গ্রাহকদের কেনাকাটার ধরন বুঝছে, ডেলিভারির সময় নির্ধারণ করছে। Flipkart বা Reliance Jio-র মতো বড় সংস্থাগুলো AI-এর সাহায্যে কর্মদক্ষতা বাড়িয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়—মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব এখনও অক্ষুন্ন, কারণ ভারতের বাজার বৈচিত্র্যে ভরা, ভাষার পার্থক্যও একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

সুযোগ যতটা, চ্যালেঞ্জও ততটাই

একদিকে যেমন AI-এর সাহায্যে উৎপাদনশীলতা বাড়ছে , যেমন সুরাটের এক টেক্সটাইল ফ্যাক্টরি আগেভাগেই চাহিদা আন্দাজ করে তৈরি করছে পণ্য, ফলে অপচয় কমছে, লাভ বাড়ছে—তেমনই টেক সংস্থাগুলো প্রতিনিয়ত নতুন নতুন AI-Solution তৈরি করছে।

তবে বিপরীতে, কাজ হারানোর আতঙ্কও আছে। Gartner-এর রিপোর্ট বলছে, ২০২৬ সালের মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকার বহু সংস্থার ৫০% পর্যন্ত মিড লেভেল ম্যানেজাররা চাকরি হারাতে পারে। ভারতে যদিও এমন সরাসরি প্রভাব পড়তে নাও পারে, তবু আতঙ্কটা রয়েই গেছে। তার উপর ভারতের গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সমস্যা, আর সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস অনেক জায়গায় AI গ্রহণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে

তাহলে কী করা উচিত?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রযুক্তি-পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে তিনটি বিষয় জরুরি—

  1. নতুন স্কিল শেখা: AI-এর সঙ্গে কাজ করতে হলে ডেটা অ্যানালিসিস, ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং-এর মতো দক্ষতা দরকার। Skill India-র মতো প্রকল্পগুলো এই পরিবর্তনে বড় ভূমিকা নিতে পারে।
  2. মানুষ AI-এর সহাবস্থান: যেমন, গ্রাহক পরিষেবায় AI Chatbot ব্যবহার হলেও বড় সিদ্ধান্ত নেবে মানুষই।
  3. নৈতিক ব্যবহারে জোর: OECD-র মতে, AI-এর প্রতিটি সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত স্বচ্ছ, ন্যায্য ও পক্ষপাতহীন।

ইউরোপ বা আমেরিকার মতো পথে হাটতে চায় না ভারত। এখানে ম্যানেজারদের সরিয়ে দেওয়ার তাড়া কম, কারণ লেবার কস্ট তুলনামূলকভাবে কম। আবার সমাজে বস-এর গুরুত্ব এখনো অনেক। তাই ভারত AI কে গ্রহণ করছে ঠিকই, তবে নিজের সংস্কৃতি আর কাঠামো অক্ষুন্ন রেখে। এই হাইব্রিড মডেল ভারতকে বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ এনে দিতে পারে।

AI-এর ঢেউ শুধু প্রযুক্তির নয়—মানুষের ভাবনাচিন্তা, কাজের ধরন, অফিসের কাঠামো—সবকিছুকেই পাল্টে দিচ্ছে। যদি ভারত সময় থাকতে দক্ষতা অর্জন করে, নৈতিকভাবে AI ব্যবহার করে, আর নিজের সংস্কৃতিকে একইসাথে আগলে রাখে, তাহলে এই নতুন যুগে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতেও সক্ষম হবে। তবে ভুল পথে হাঁটলে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিও কম নয়।

- Advertisement -

Related articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Latest posts