Monday, June 2, 2025
Homeপ্রতিরক্ষা'অপারেশন সিন্দুর'-এ চীনা অস্ত্রের ব্যর্থতা, বেইজিংয়ের নীরব কূটনীতি কি নতুন চালের লক্ষণ?

‘অপারেশন সিন্দুর’-এ চীনা অস্ত্রের ব্যর্থতা, বেইজিংয়ের নীরব কূটনীতি কি নতুন চালের লক্ষণ?

-

- Advertisement -
- Advertisement -

দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ভারতপাকিস্তান-এর সামরিক সংঘর্ষে একটি বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে পাকিস্তানের ব্যবহৃত চীন-নির্মিত অস্ত্রগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে। বিশেষ করে ‘অপারেশন সিন্দুর’ চলাকালীন পাকিস্তানের এইসব অস্ত্রের ব্যর্থতা নিয়ে চীনা প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষের নীরবতা এখন আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

চুপ থেকেও সক্রিয় চীন

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিনিয়র কর্নেল ঝাং শিয়াওগাং, পাকিস্তানের ব্যবহৃত PL-15E মিসাইল এবং HQ-9 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এর ব্যর্থতা নিয়ে কোনো স্পষ্ট মন্তব্য করতে রাজি হননি। ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এইসব অস্ত্র ‘গড়ের নিচে’ পারফর্ম করেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে একেবারেই অকার্যকর ছিল। ভারতের হাতে উদ্ধার হওয়া অবিস্ফোরিত PL-15E মিসাইল সেই দাবির প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

চীনের এই চুপ থাকা আসলে একটি কৌশলগত অবস্থান। বিশ্লেষকদের মতে, চীন চায় না যে তাদের সামরিক রপ্তানির সম্ভাব্য ত্রুটিগুলো প্রকাশ্যে আসুক, কারণ তারা পাকিস্তানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে চায়। আবার একইসঙ্গে তারা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। এই দ্বৈত ভূমিকাই বেইজিংয়ের কৌশলী নীরবতার পেছনের মূল কারণ।

অপারেশন সিন্দুর ও চীনা প্রযুক্তির ভরাডুবি

ভারতের সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিন্দুর’ চলাকালীন পাকিস্তানের ব্যবহার করা HQ-9 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ভারতের আধুনিক অস্ত্র—যেমন BrahMos, SCALP Cruise Missile এবং Loitering Munition—থেকে কোনো রকম সুরক্ষা দিতে পারেনি। এই ব্যর্থতার ফলে পাকিস্তানের একাধিক কৌশলগত সামরিক স্থাপনা ধ্বংস হয়।

এই ঘটনাগুলো চীনের সামরিক প্রযুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। একাধিক ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, এইসব চীনা অস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফলাফল দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। যা চীনের defense export industry-এর জন্য এক ধরনের ‘রেড ফ্ল্যাগ’।

কৌশলের আড়ালে কূটনীতি

বর্তমানে পাকিস্তানের ৮১ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম আসে চীন থেকে। এই নির্ভরশীলতা চীনকে একটি বড় প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে দক্ষিণ এশিয়ায়। কিন্তু অস্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, চীনের দ্বন্দ্বপূর্ণ অবস্থান সামনে চলে আসে—একদিকে ‘All-weather Friendship’ বজায় রাখা পাকিস্তানের সঙ্গে, আর অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়ন।

ঝাং শিয়াওগাং সাংবাদিকদের বলেন, “PL-15E একটি export-specific missile এবং এর কার্যকারিতা নিয়ে আলাদা দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে হবে।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি একরকম ব্যর্থতার গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি তিনি দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানান।

তবে চীনের অস্ত্রের ব্যর্থতা এবং তথ্য প্রচারণার কৌশল এখন দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও অবস্থান নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে। আগামী দিনে এই বিতর্ক কীভাবে চীনের defense export policyregional stability-কে প্রভাবিত করবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় দেখার বিষয়।

- Advertisement -

Related articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Latest posts