ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া চেনাব নদীর উপরে নির্মিত চেনাব ব্রিজ। ৬ জুন ২০২৫ তারিখে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) এই অসাধারণ রেল সেতুটির উদ্বোধন করেছেন, যা দেশের উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুলা রেল লিঙ্ক (USBRL) প্রকল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই সেতুটি শুধু ভারতের নয়, গোটা বিশ্বের গর্ব – কারণ এটি এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলওয়ে আর্চ ব্রিজ, যার উচ্চতা প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের থেকেও ৩৫ মিটার বেশি!
কীভাবে অনন্য চেনাব ব্রিজ?
এই ব্রিজটি নদীর নিচ থেকে ৩৫৯ মিটার উঁচুতে অবস্থিত – অর্থাৎ আইফেল টাওয়ারের (৩২৪ মিটার) থেকেও বেশি! মোট দৈর্ঘ্য ১,৩১৫ মিটার, যার মধ্যে ৪৬৭ মিটার লম্বা প্রধান আর্চ স্প্যান রয়েছে। বাক্কাল ও কাউরি গ্রামের মাঝে অবস্থিত এই ব্রিজে রয়েছে ১৭টি স্প্যান, যা একে একটি স্থাপত্যশৈলীর বিস্ময়ে পরিণত করেছে।
চরম প্রতিকূলতার মাঝেও শক্তিশালী
হিমালয়ের খাঁড়ি ও দুর্গম অঞ্চল পেরিয়ে এই ব্রিজ তৈরি হয়েছে এমনভাবে, যাতে ২৬৬ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগের ঝড় বা ৮ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পও এটিকে ক্ষতি করতে না পারে। এমনকি ৪০ টন TNT-র মতো শক্তিশালী বিস্ফোরণেও এই সেতু অটুট থাকবে। -২০°C থেকে ৪০°C পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে, তাই বছরের যে কোনও সময় এই সেতু ব্যাবহার করা সম্ভব।
সুরক্ষা ও দীর্ঘস্থায়িত্বে নজির
এই সেতুর আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ১২০ বছর! ১০০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে ট্রেন চলার উপযোগী। বিশেষ 63 mm মোটা স্টিল দিয়ে তৈরি হওয়ায় এটি সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ প্রতিরোধেও সক্ষম। পাশাপাশি, এতে বসানো হয়েছে উন্নত সেন্সর, যা বাতাসের গতি ৯০ কিমি/ঘণ্টা ছাড়ালেই সতর্কবার্তা দেবে এবং ট্রেন চলাচল থামিয়ে দেবে।
চ্যালেঞ্জ আর সাফল্য
যদিও প্রকল্পটি 2002-তে অনুমোদিত হয়, কাজ শুরু হয় 2017-তে। পাহাড়ি প্রতিকূলতা ও ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হওয়ায় কাজ ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। Afcons Infrastructure, VSL India ও দক্ষিণ কোরিয়ার Ultra Construction-এর যৌথ উদ্যোগে, Konkan Railway Corporation-এর তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ₹1,486 কোটি টাকা।
অর্থনীতি ও পর্যটন
চেনাব ব্রিজ এখন শুধু এক যাতায়াতের মাধ্যম নয়, কাশ্মীরের সঙ্গে গোটা ভারতের সংযোগের এক নিরবিচ্ছিন্ন সেতু। Vande Bharat Express এই ব্রিজ পেরিয়ে কাটরা থেকে শ্রীনগর পৌঁছাতে সময় নেবে ৩ ঘণ্টারও কম – আগে যেখানে ৬ ঘণ্টা লাগত। এর ফলে, কাশ্মীরের পর্যটন, কৃষি ও ব্যবসায় উন্নতির নতুন দরজা খুলে গেল।
স্থানীয় মানুষজন বলছেন, ইতিমধ্যেই এই ব্রিজ পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে এখানে Bungee Jumping, Water Sports, এমনকি Trekking-এর সুযোগ চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চেনাব ব্রিজ কেবলমাত্র একটি রেলসেতু নয় – এটি ভারতের ইচ্ছাশক্তি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও অগ্রগতির প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) এটিকে “সংকল্প থেকে সিদ্ধি”-র প্রকৃত উদাহরণ বলে বর্ণনা করেছেন।
এই সেতু কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে শুধু দৃঢ়ভাবে যুক্ত করবে না বরং এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নেরও পথ খুলে দেবে।
ভারতের স্মার্টফোন বাজারে নতুন উত্তেজনা নিয়ে এসেছে OnePlus। iPhone 16e ইতিমধ্যে বাজারে এসেছে। তবে এবার…
অবশেষে সেই প্রতীক্ষিত দিন এল। বহুদিনের অপেক্ষা আর সমালোচনার পর ভারতীয় বিমান বাহিনী (IAF) পেতে…
Yamaha – নামটাই যথেষ্ট বাইকপ্রেমীদের হৃদয় কাঁপাতে। আর এবার সেই বিখ্যাত Japanese সংস্থা আনছে এমন…
মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মাত্র চার দিন চলা তীব্র সামরিক সংঘর্ষে ভারতীয় বায়ুসেনা…
ভারতের সবচেয়ে ধনী এবং প্রভাবশালী শিল্পপতিদের নাম উঠলেই সবার আগে মনে পড়ে Mukesh Ambani–র কথা।…
তীব্র গরমে ঘরটা যখন ওভেন হয়ে ওঠে, তখন একটা ভাল AC যেন স্বস্তি দেয়। কিন্তু…
This website uses cookies.