প্রতিরক্ষা

যুদ্ধ এখন স্মার্টফোনে! AI-ড্রোনের যুগে সাধারণ মানুষ কতটা সুরক্ষিত?

আধুনিক যুগে যুদ্ধের চেহারা বদলে যাচ্ছে। ড্রোন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), এবং সাইবার প্রযুক্তির মতো উন্নত প্রযুক্তি যুদ্ধের কৌশলকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে। কিন্তু এই প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের জন্য নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে, বিশেষ করে যুদ্ধের সময় সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে। ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস (ICRC)-এর একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছে।

প্রযুক্তি যুদ্ধকে কীভাবে বদলাচ্ছে?
আজকাল যুদ্ধ শুধু মাটিতে বা আকাশে হচ্ছে না, ডিজিটাল জগতেও ছড়িয়ে পড়ছে। সাইবার আক্রমণ, ড্রোন, এবং AI-চালিত অস্ত্র ব্যবহার বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো ব্যক্তি বাড়িতে বসে স্মার্টফোনের মাধ্যমে যুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ করে বা শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণ চালিয়ে যুদ্ধে অংশ নিতে পারে। এই প্রযুক্তি যুদ্ধকে দ্রুত এবং জটিল করে তুলছে।

সাধারণ মানুষের জন্য ঝুঁকি
প্রযুক্তির এই অগ্রগতি সাধারণ মানুষের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনছে। যেমন, কোনো শহরে ড্রোন দিয়ে আক্রমণের সময় সঠিকভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ না করা হলে নিরীহ মানুষ হতাহত হতে পারে। এছাড়া, সাইবার আক্রমণে বিদ্যুৎ, জল বা হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে। ICRC-এর মতে, শহরাঞ্চলে যুদ্ধের সময় এই ঝুঁকি আরও বেশি, কারণ শহরে মানুষের ঘনত্ব বেশি এবং ইনফ্রাস্টাকচার-এর ওপর নির্ভরতা বেশি।

আন্তর্জাতিক আইনের গুরুত্ব
যুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন (IHL) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আইন বলে, যুদ্ধে শুধু সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করা যাবে, সাধারণ মানুষ বা তাদের সম্পত্তির ক্ষতি করা যাবে না। কিন্তু নতুন প্রযুক্তির কারণে এই আইন মানা কঠিন হয়ে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, AI-চালিত অস্ত্র যদি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত না হয়, তবে তা ভুল লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে। ICRC পরামর্শ দিয়েছে যে, নতুন প্রযুক্তি তৈরির সময় থেকেই এই আইন মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

কী করা উচিত?
ICRC-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশগুলোকে তাদের সামরিক কৌশল এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও সতর্ক হতে হবে। যুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষের ক্ষতি কমাতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:

  • সঠিক প্রশিক্ষণ: সেনাবাহিনীকে প্রযুক্তি ব্যবহারে সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে, যাতে তারা সাধারণ মানুষ এবং সেনাদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে।
  • প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণ: AI বা ড্রোনের মতো প্রযুক্তি তৈরির সময় থেকেই আইন মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
  • সচেতনতা বৃদ্ধি: সাধারণ মানুষের মধ্যে ডিজিটাল ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে, যাতে তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারে।

যুদ্ধের নতুন এই ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করলেও, তা নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জরুরি। আমরা সবাই চাই, যুদ্ধের ক্ষতি কম হোক এবং শান্তি বজায় থাকুক। তাই সরকার, সেনাবাহিনী এবং প্রযুক্তি নির্মাতাদের একসঙ্গে কাজ করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

Recent Posts

Jovi ব্র্যান্ডে Vivo-র বাজিমাত! দুর্দান্ত ফিচার নিয়ে লঞ্চ হল Jovi V50 5G ও V50 Lite 5G

Vivo অবশেষে তাদের বহু প্রতীক্ষিত নতুন সাব-ব্র্যান্ড Jovi-র যাত্রা শুরু করল! গত ২০২৪ সাল থেকেই…

8 hours ago

পকেট মানি জমিয়েই কিনতে পারবেন সেরা ফিচারসের এই ৫ ল্যাপটপ! সস্তা দামে বাজার মাতাচ্ছে

অফিস, পড়াশোনা, অনলাইন ক্লাস বা হালকা গেমিং—সব কিছুর জন্য চাই একটা ভালো পারফরম্যান্সের ল্যাপটপ। কিন্তু…

9 hours ago

অবিশ্বাস্য! Ola-র এই ইলেকট্রিক বাইকে পাবেন ₹10,000 বেনিফিট ও একাধিক ফ্রি সার্ভিস

ইলেকট্রিক টু-হুইলারের বাজারে আবার এক নতুন ঝড় তুলল Ola Electric। সামনে এল দারুণ ছাড়ের ঘোষণা।…

10 hours ago

“তুমি ভুল করছ…” ভারত সফরে এসে ছেলে Elon Muskকে সতর্ক করলেন বাবা Errol

বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ও টেক জগতের অন্যতম চর্চিত নাম Elon Musk এখনও ভারতে আসেননি,…

11 hours ago

ভারতের আকাশের নতুন ব্রহ্মাস্ত্র! GPS ছাড়াই শত্রুর ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেবে IceBreaker

ভারতের আকাশে এবার আরও নিখুঁত, আরও মারাত্মক অস্ত্র যুক্ত হতে চলেছে। একাধিক রিপোর্টে জানা গেছে,…

1 day ago

BSNL-এর 5G নিয়ে বড় খবর! শীঘ্রই শুরু হবে ট্রায়াল আর পরিষেবা

সরকারি টেলিকম সংস্থা BSNL তার কোটি কোটি গ্রাহকের জন্য নিয়ে এসেছে এক বিশাল সুসংবাদ। এতদিন…

1 day ago